ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২২

পৃথিবী,আকাশ,দিন,রাত সৃষ্টিতে আল্লাহর ক্ষমতার নিদর্শন

 

 –আল কুরআন, ৩-সুরা: আলে ইমরান, আয়াত (১৯০-২০০)

আয়াত:( ৩:১৯০)

অনুবাদ: পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের পালাক্রমে যাওয়া আসার মধ্যে সেই সমস্ত বুদ্ধিমান লোকদের জন্য রয়েছে বহুতর নিদর্শন। “

আয়াত নং :-১৯১

” যেসমস্ত বুদ্ধিমান লোক উঠতে, বসতে ও শয়নে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর গঠনাকৃতি নিয়ে চিন্তা- ভাবনা করে ১, (তারা আপনা আপনি বলে ওঠেঃ) “হে আমাদের প্রভু! এসব তুমি অনর্থক ও উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে সৃষ্টি করো নি। বাজে ও নিরর্থক কাজ করা থেকে তুমি পাক-পবিত্র ও মুক্ত। কাজেই হে প্রভু! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করো।২”

তাফসীর :

টিকা:১) অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তিই যদি সে আল্লাহর প্রতি গাফিল না হয় এবং বিশ্ব-জাহানের নিদর্শনসমূহ বিবেক-বুদ্ধিহীন জন্তু-জানোয়ারের দৃষ্টিতে না দেখে গভীর নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের দৃষ্টিতে দেখে ও সে সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে তাহলে প্রতিটি নিদর্শনের সাহায্যে অতি সহজে যথার্থ ও চূড়ান্ত সত্যের দ্বারে পৌঁছতে পারে।

টিকা:২) বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থাপনাকে গভীর দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করার পর এ সত্য তার সামনে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, এটি পুরোপুরি একটি জ্ঞানগর্ভ ব্যবস্থাপনা। মহান আল্লাহ‌ তাঁর যে সৃষ্টির মধ্যে নৈতিক অনুভূতি সৃষ্টি করেছেন, যাকে বিশ্ব-জগতে কাজ করার স্বাধীন ক্ষমতা ও ইখতিয়ার দিয়েছেন এবং জ্ঞান-বুদ্ধি ও সত্য-মিথ্যা এবং ভালো-মন্দের পার্থক্য করার ক্ষমতা দিয়েছেন, তাকে তার এ দুনিয়াবী জীবনের কার্যাবলীর জন্য কোন জবাবদিহি করতে হবে না এবং সে ভালো কাজের জন্য পুরস্কার ও খারাপ কাজের জন্য শাস্তি পাবে না-এটা সম্পূর্ণ একটি বুদ্ধি বিবেক বিরোধী কথা।

(৩:১৯২)

অনুবাদ: তুমি যাকে জাহান্নামে ফেলে দিয়েছো, তাকে আসলে বড়ই লাঞ্ছনা ও অপমানের মধ্যে ঠেলে দিয়েছো এবং এহেন জালেমদের কোন সাহায্যকারী হবে না।

(৩:১৯৩)

অনুবাদ: হে আমাদের মালিক! আমরা একজন আহ্বানকারীর আহ্বান শুনেছিলাম। তিনি ঈমানের দিকে আহবান করছিলেন। তিনি বলছিলেন, তোমরা নিজেদের রবকে মেনে নাও। আমরা তার আহবান গ্রহণ করেছি। কাজেই, হে আমাদের প্রভু! আমরা যেসব গোনাহ করছি তা মাফ করে দাও। আমাদের মধ্যে যেসব অসৎবৃত্তি আছে সেগুলো আমাদের থেকে দূর করে দাও এবং নেক লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করো।

(৩:১৯৪)

অনুবাদ: হে আমাদের রব! তোমার রসূলদের মাধ্যমে তুমি যেসব ওয়াদা করেছো আমাদের সাথে, সেগুলো পূর্ণ করো এবং কিয়ামতের দিন আমাদের লাঞ্ছনার গর্তে ফেলে দিয়ো না। নিঃসন্দেহে তুমি ওয়াদা খেলাপকারী নও।”

(৩:১৯৫)

অনুবাদ: জবাবে তাদের রব বললেনঃ “আমি তোমাদের কারো কর্মকাণ্ড নষ্ট করবো না। পুরুষ হও বা নারী, তোমরা সবাই একই জাতির অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যারা আমার জন্য নিজেদের স্বদেশ ভূমি ত্যাগ করেছে এবং আমার পথে যাদেরকে নিজেদের ঘর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া ও কষ্ট দেয়া হয়েছে এবং যারা আমার জন্য লড়েছে ও মারা গেছে, তাদের সমস্ত গোনাহ আমি মাফ করে দেবো এবং তাদেরকে এমন সব বাগানে প্রবেশ করাবো যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলবে। এসব হচ্ছে আল্লাহর কাছে তাদের প্রতিদান এবং সবচেয়ে ভালো প্রতিদান আল্লাহর কাছেই আছে।”

(৩:১৯৬)

অনুবাদ: হে নবী! দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে আল্লাহর নাফরমান লোকদের চলাফেরা যেন তোমাকে ধোঁকায় ফেলে না দেয়।

(৩:১৯৭)

অনুবাদ: এটা নিছক কয়েক দিনের জীবনের সামান্য আনন্দ ফূর্তি মাত্র। তারপর এরা সবাই জাহান্নামে চলে যাবে, যা সবচেয়ে খারাপ স্থান।

(৩:১৯৮)

অনুবাদ: বিপরীত পক্ষে যারা নিজেদের রবকে ভয় করে জীবন যাপন করে তাদের জন্য এমন সব বাগান রয়েছে, যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলছে। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য মেহমানদারীর সরঞ্জাম। আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে, নেক লোকদের জন্য তাই ভালো।

(৩:১৯৯)

অনুবাদ: আহলি কিতাবদের মধ্যেও এমন কিছু লোক আছে, যারা আল্লাহকে মানে তোমাদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তার ওপর ঈমান আনে এবং এর আগে তাদের নিজেদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছিল তার ওপরও ঈমান রাখে, যারা আল্লাহর সামনে বিনত মস্তক এবং আল্লাহর আয়াতকে সামান্য দামে বিক্রি করে না। তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে। আর তিনি হিসেব চুকিয়ে দেবার ব্যাপারে দেরী করেন না।

(৩:২০০)

অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন