ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২২

যে কারণে তুর্কি নারীরা কোরআন হিফজে বেশি আগ্রহী

 


| পবিত্র কোরআনের হিফজ তথা মুখস্থ করা ইসলাম ধর্মে মর্যাদাপূর্ণ ও অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এতে সাধারণত তিন বা চার বছর সময় লাগে। অবশ্য অনেক মেধাবী ছেলে-মেয়েরা আরো কম সময়ে হেফজ সম্পন্ন করে। সাধারণত ৭-১৩ বছর বয়সের মধ্যে ছেলে-মেয়েরা পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করে। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাঁদেরকে পড়াশোনা করতে হয়।  আলজাজিরা নেটের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০০২ সালে তুরস্কে ১৬৭৭টি কোরআন হেফজের মাদরাসা ছিল। এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ হাজার ৬৭৫-এ দাঁড়িয়েছে। তুরস্কের ধর্ম বিভাগের তথ্য মতে, প্রতিবছর এসব মাদরাসায় ১৫ হাজারের বেশি হাফেজ কোরআন মুখস্থ সম্পন্ন করে।  তুরস্কে গত দুই দশকে মেয়েদের কোরআন শেখানোর উদ্দেশ্যে অনেক মাদরাসা তৈরি হয়। পবিত্র কোরআনের হাফেজ হওয়ার বাসনায় মেয়েরা তাতে আবাসিক থাকেন। নিজের ঘর-বাড়ি ও আত্মীয়দের ছেড়ে মাদরাসায় আবাসিক থাকা কষ্টকর হলেও তা জীবনের বড় লক্ষ্য পূরণে সহায়ক। তুরস্কে মেয়েদের কোরআন হেফজ নিয়ে ফরাসি দৈনিক লে মন্ডে পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে শিক্ষার্থীদের কোরআন মুখস্থের পাশাপাশি অবসরে আনন্দ-বিনোদনের কথা তুলে ধরা হয়। কারণ মুখস্থের মতো কঠিন কাজ সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য মনের উৎফুল্লতাও অনেক প্রয়োজন।  কোরআন শেখা তুর্কি মেয়েদের জীবনযাত্রা নিয়ে ‘হাফিজ : দ্য গার্ডিয়ান অব কোরআন’ শিরোনামে তুরস্কের ফটো সাংবাদিক সাবিহা সাইমন একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। তা ২০২০ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো পুরস্কার লাভ করে। মূলত তাঁর অধিকাংশ ফটোগ্রাফি মেয়েদের কোরআন হেফজের আবাসিক মাদরাসা নিয়ে হওয়ায় তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ সাড়া ফেলে।  ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মাদরাসার মেয়ে হেফজ শিক্ষার্থীদের অবসর সময়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাস উপভোগের চিত্র দিয়ে সাবিহা তাঁদের জীবনাচার বর্ণনা করেন। মূলত এসব হেফজ মাদরাসায় প্রবেশে নানা রকম বিধি-নিষেধ আছে। কিন্তু ৩৫ বছর বয়সী ফটো সাংবাদিক সাবিহা সাইমন আনাতোলিয়ার পাঁচটি শহর ঘুরে বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় কাটান এবং তাঁদের বর্ণিল জীবনচিত্র তুলে ধরেন।  ইস্তাম্বুলের অধিবাসী সাবিহা সাইমন বর্ণনা করেন, ‘১২ বছর বয়সে আমার যমজ বোনের সঙ্গে একটি হেফজ মাদরাসায় পড়ি। তখন মাদরাসাটি ছিল খুবই ছোট। পরবর্তী সময়ে আমার বোন পবিত্র কোরআনে হাফেজ হন।’ কোরআন মুখস্থ করা নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে জীবনাচার তুলে ধরে সাবিহা ইসলামী সংস্কৃতির উজ্জ্বল দিক তুলে ধরার প্রয়াস চালান, যা পশ্চিমা মিডিয়ায় অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়। মূলত তাঁদের জীবনাচারে তিনি নিজের শৈশবের প্রতিচ্ছবি দেখতে পান। তাই নিজের জীবনের পুরনো চিত্রগুলোই যেন তিনি ক্যামেরাবন্দি করেন। সাবিহা জানান, ‘মূলত সব কিছুই পুনরাবৃত্তির ওপর নির্ভর করে। তাই যেকোনো বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্বের জন্য প্রথমে শব্দ মুখস্থ করতে হয়। এরপর তার অর্থ বুঝতে অনেক বছর পড়াশোনা করতে হয়। তাই মানবজীবনে পবিত্র কোরআনের নির্দেশনা অনুসরণ করতে প্রথমে তা মুখস্থ করা হয়। এরপর দীর্ঘকাল পড়াশোনা করে তাঁরা এর মর্ম উপলব্ধি করেন। পবিত্র কোরআন মুখস্থের অনুশীলনের জন্য শৃঙ্খলা, আত্মোৎসর্গ ও গভীর মনোযোগ প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।’ সাবিহা সাইমন ১৯৮৬ সালে ইস্তাম্বুলে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ বাড়িতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে হেফজ মাদরাসায় পড়েন। এরপর জর্দানে আরবি ভাষা শিখতে যান। নিজের মতো করে ফটোগ্রাফি করেন। নারী, ইসলামী সংস্কৃতি ও স্থিরচিত্র নিয়ে কাজ করেন তিনি। ইস্তাম্বুল বিলগি ইউনিভার্সিটি থেকে বৈদেশিক বাণিজ্য ও অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক করেন। এরপর কালচারাল স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন।  তুরস্কে গত ২০ বছর যাবৎ প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের পৃষ্ঠপোষকতায় নারীদের হেফজ মাদরাসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জানা যায়, মূলত ‘আদর্শ ও নিষ্ঠাবান প্রজন্ম’ তৈরির বাসনা থেকে এরদোয়ান এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরদোয়ান নিজেও ইমাম হাপি স্কুলে পড়াশোনা করেন। তাঁর বাবার ইচ্ছা ছিল তিনি একজন হাফেজ হবেন।  দীর্ঘকাল যাবৎ এরদোয়ান মুসলিম সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারে কাজ করছেন। ইসলাম শিক্ষার প্রসার করে আদর্শ নাগরিক গড়ে তুলতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। যার সুফল বর্তমানে দৃশ্যমান।  সূত্র : আলজাজিরা নেট Source: Kalerkontho

আল কুরআন এ রুহ

 

আল কুরআন এ রুহ


“তারা তোমাকে রুহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলে দাও, রুহ আমার রবের হুকুমঘটিত বিষয়। কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছ।”- [সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৮৫ (প্রথম পর্ব)]

তাফসির : আগের আয়াতে বলা হয়েছিল, মানুষ ব্যক্তিগত কাজকর্মে অভ্যাস ও প্রথার অনুসরণ করে। প্রত্যেকে স্বভাব-প্রকৃতির অনুসরণ করে। মানুষের এই কর্মযজ্ঞ চলতে থাকে যত দিন তার দেহে রুহ বা প্রাণ থাকে। রুহের হকিকত কী—আলোচ্য আয়াতে সে প্রসঙ্গ আনা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে অন্তত ২৩ বার ‘রুহ’ শব্দ এসেছে। বাংলা ভাষায় এর পরিচিত অর্থ হলো প্রাণ বা আত্মা। কোরআনে রুহ শব্দ প্রধানত তিনটি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

এক. ‘রুহ’ হলো সেই অলৌকিক বস্তু, যা মানুষের ভেতর ফুঁ দিয়ে প্রাণের সঞ্চার করা হয়। যেমন—আলোচ্য আয়াতে রুহ বা প্রাণের হকিকত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছে।

দুই. রুহ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে জিবরাইল (আ.)-এর জন্য। অর্থাৎ কোরআনের কোনো কোনো স্থানে রুহ মানে জিবরাইল (আ.)। ইরশাদ হয়েছে, ‘বলে দাও, তোমার রবের কাছ থেকে রুহুল কুদুস [জিবরাইল (আ.)] সত্যসহ কোরআন নাজিল করে…।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১০২)

তিন. কখনো কখনো রুহ শব্দ এসেছে কোরআন ও ওহি বোঝানোর জন্য। ইরশাদ হয়েছে, ‘এভাবেই আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি রুহ তথা আমার নির্দেশ। তুমি তো মানতে না কিতাব কী এবং ঈমান কী…!’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ৫২)
দেখা যায়, যে তিনটি প্রসঙ্গে রুহ শব্দ এসেছে, প্রতিটি প্রসঙ্গই মানুষের জীবন ও মানবসমাজের প্রাণের উৎস।

রুহ এমন অশরীরী বস্তু, যা কারো দৃষ্টিগোচর হয় না। কিন্তু প্রত্যেক প্রাণীর শক্তি ও সামর্থ্য এই রুহের মধ্যেই লুক্কায়িত। এর প্রকৃত স্বরূপ কেউ জানে না। ইহুদি পণ্ডিতরা একবার নবী করিম (সা.)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিল। তখনই আলোচ্য আয়াত অবতীর্ণ হয়। (বুখারি, সুরা বনি ইসরাঈলের তাফসির)

প্রশ্নকারীরা জানতে চেয়েছিল রুহ জিনিসটা আসলে কী বা কেমন? কোরআনে এ প্রশ্নের তাত্ত্বিক জবাব দেওয়া হয়নি। শুধু এতটুকু বলে দেওয়া হয়েছে যে রুহ বস্তুগত কিংবা অনুভবগ্রাহ্য কোনো জিনিস নয় যে তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারবে। বরং রুহ সম্পূর্ণ অবস্তুগত একটি জিনিস, যা মহান আল্লাহর নির্দেশঘটিত। রুহের হকিকত বেশির ভাগ মানুষের উপলব্ধিক্ষমতার বাইরে। এই বিশ্বভুবনের সত্যাসত্য সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান খুবই সীমিত। উপলব্ধিক্ষমতাও যৎসামান্য।
রুহের হকিকত নিয়ে মানবসমাজে অনেক মতবিরোধ আছে। রুহ অতি সূক্ষ্ম একটি প্রাণী, যা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে রক্ত, গোলাপ ফুলের মধ্যে পানি এবং জলপাইয়ের মধ্যে তেল বিচরণ করার মতো বিচরণ করে। রুহের মাধ্যমেই দেহ জীবিত থাকে। রুহের অবস্থানক্ষেত্র হচ্ছে দেহ। যখন দেহ থেকে রুহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন দেহ থেকে প্রাণও চলে যায়। রুহ সৃষ্ট বস্তু। তবে দেহের মৃত্যুর কারণে রুহ মৃত্যুবরণ করে না। রুহের দেহত্যাগ এবং দেহ থেকে রুহের বের হয়ে যাওয়াই মৃত্যু। তবে রুহ নিঃশেষ হয় না, বরং দেহ ধ্বংস হওয়ার পরও তা অবশিষ্ট থেকে যায়। এই রুহ হয়তো জান্নাতে অথবা জাহান্নামে স্থান পায়।

গ্রন্থনা : মাওলানা কাসেম শরীফ

আল কুরআন, ৩-আলে-ইমরান (৩ঃ১৯০-২০০)

 


অনুবাদ: পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের পালাক্রমে যাওয়া আসার মধ্যে সেই সমস্ত বুদ্ধিমান লোকদের জন্য রয়েছে বহুতর নিদর্শন –

অনুবাদ: যে সমস্ত বুদ্ধিমান লোক উঠতে, বসতে ও শয়নে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর গঠনাকৃতি নিয়ে চিন্তা- ভাবনা করে, (তারা আপনা আপনি বলে ওঠেঃ) “হে আমাদের প্রভু! এসব তুমি অনর্থক ও উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে সৃষ্টি করো নি। বাজে ও নিরর্থক কাজ করা থেকে তুমি পাক-পবিত্র ও মুক্ত। কাজেই হে প্রভু! জাহান্নামের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করো।

অনুবাদ: তুমি যাকে জাহান্নামে ফেলে দিয়েছো, তাকে আসলে বড়ই লাঞ্ছনা ও অপমানের মধ্যে ঠেলে দিয়েছো এবং এহেন জালেমদের কোন সাহায্যকারী হবে না।

অনুবাদ: হে আমাদের মালিক! আমরা একজন আহ্বানকারীর আহ্বান শুনেছিলাম। তিনি ঈমানের দিকে আহবান করছিলেন। তিনি বলছিলেন, তোমরা নিজেদের রবকে মেনে নাও। আমরা তার আহবান গ্রহণ করেছি। কাজেই, হে আমাদের প্রভু! আমরা যেসব গোনাহ করছি তা মাফ করে দাও। আমাদের মধ্যে যেসব অসৎবৃত্তি আছে সেগুলো আমাদের থেকে দূর করে দাও এবং নেক লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করো।

অনুবাদ: হে আমাদের রব! তোমার রসূলদের মাধ্যমে তুমি যেসব ওয়াদা করেছো আমাদের সাথে, সেগুলো পূর্ণ করো এবং কিয়ামতের দিন আমাদের লাঞ্ছনার গর্তে ফেলে দিয়ো না। নিঃসন্দেহে তুমি ওয়াদা খেলাপকারী নও।”

অনুবাদ: জবাবে তাদের রব বললেনঃ “আমি তোমাদের কারো কর্মকাণ্ড নষ্ট করবো না। পুরুষ হও বা নারী, তোমরা সবাই একই জাতির অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যারা আমার জন্য নিজেদের স্বদেশ ভূমি ত্যাগ করেছে এবং আমার পথে যাদেরকে নিজেদের ঘর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া ও কষ্ট দেয়া হয়েছে এবং যারা আমার জন্য লড়েছে ও মারা গেছে, তাদের সমস্ত গোনাহ আমি মাফ করে দেবো এবং তাদেরকে এমন সব বাগানে প্রবেশ করাবো যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলবে। এসব হচ্ছে আল্লাহর কাছে তাদের প্রতিদান এবং সবচেয়ে ভালো প্রতিদান আল্লাহর কাছেই আছে।”

অনুবাদ: হে নবী! দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে আল্লাহর নাফরমান লোকদের চলাফেরা যেন তোমাকে ধোঁকায় ফেলে না দেয়।

অনুবাদ: এটা নিছক কয়েক দিনের জীবনের সামান্য আনন্দ ফূর্তি মাত্র। তারপর এরা সবাই জাহান্নামে চলে যাবে, যা সবচেয়ে খারাপ স্থান।

অনুবাদ: বিপরীত পক্ষে যারা নিজেদের রবকে ভয় করে জীবন যাপন করে তাদের জন্য এমন সব বাগান রয়েছে, যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলছে। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য মেহমানদারীর সরঞ্জাম। আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে, নেক লোকদের জন্য তাই ভালো।

অনুবাদ: আহলি কিতাবদের মধ্যেও এমন কিছু লোক আছে, যারা আল্লাহকে মানে তোমাদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে তার ওপর ঈমান আনে এবং এর আগে তাদের নিজেদের কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছিল তার ওপরও ঈমান রাখে, যারা আল্লাহর সামনে বিনত মস্তক এবং আল্লাহর আয়াতকে সামান্য দামে বিক্রি করে না। তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে। আর তিনি হিসেব চুকিয়ে দেবার ব্যাপারে দেরী করেন না।

অনুবাদ: হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে।

সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১

দুইবারে এইচএসসি পাস, প্রথমবারে বিসিএস ক্যাডার!


সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে ২০০৮ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে ফেল করি। পরের বছর আবার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস (জিপিএ ৩.৫০) করি। ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকা কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিই। তবে ওয়েটিং লিস্টেও জায়গা করতে পারিনি। দ্বিতীয়বার সেখানে আবারও পরীক্ষা দিয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাই।

কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে কোনো চাকরি পাব কি না—এ নিয়ে আশপাশের মানুষজন নেতিবাচক কথা বলত। কিন্তু আমি জেদ করি, যে করেই হোক, বিসিএসে ভালো করতেই হবে! অনার্স তৃতীয় বর্ষের পর থেকেই বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করি। বিসিএসকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিলেও বিকল্প হিসেবে ব্যাংক, শিক্ষক নিবন্ধন ও অন্যান্য চাকরির নিয়োগ পরীক্ষারও প্রস্তুতি নিয়েছি। জব সলিউশন বই শেষ করে ফেলি অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার আগেই। যতটুকু পড়তাম তা লিখে রাখতাম এবং গুরুত্বপূর্ণ টপিক বা বিষয়বস্তু নোট করে রাখতাম।

অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পর বিসিএসের বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন বই, বিভিন্ন রেফারেন্স বই যেমন—বিশ্বরাজনীতি, মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি পড়েছি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, বাংলাদেশ বিষয়াবলির বিভিন্ন বই, সাময়িকীও কিনে পড়তাম। প্রতিদিন একটি বাংলা জাতীয় দৈনিক এবং প্রতি শুক্রবার একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা নিতাম। ইংরেজি পত্রিকাটি সারা সপ্তাহ ধরে পড়তাম। ফলে বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে আপডেট থাকার পাশাপাশি ইংরেজি অনেকটা আয়ত্তে চলে আসে।

শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার যা যা পড়তাম, শুক্রবার সেগুলো রিভিশন দিতাম। নিজের প্রস্তুতি যাচাইয়ের জন্য বেশি বেশি মডেল টেস্ট দিতাম। বিসিএস প্রিলিমিনারিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত (১০০ নম্বর বরাদ্দ) এই তিন বিষয়ের ওপর বেশি জোর দিয়েছি।

দুর্বলতা কাটানোর জন্য প্রতিদিনের রুটিনে তিন ঘণ্টার চেয়েও বেশি সময় দিয়েছি ইংরেজিতে। ঘুম থেকে উঠে অন্তত পাঁচটি ইংরেজি শব্দ পড়ে লিখে রাখতাম। সিলেবাস ধরে গ্রামারের টপিকগুলো অনুশীলনের সময়ও নোট করেছি। প্রতিদিন দুজন সাহিত্যিক ও তাঁদের সাহিত্যকর্ম পড়া ছিল রুটিনের অংশ। প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখেছি গ্রামার অংশের Parts of speech, determiner, Verb, preposition, Idioms and Phrase, Clasue, Synonyms and antonyms, Sentence, Transformation   ইত্যাদি টপিকের ওপর তুলনামূলক বেশি প্রশ্ন থাকে। তাই গুরুত্বপূর্ণ এই টপিকগুলো বেশি বেশি পড়ার চেষ্টা করেছি।

ইংরেজির মতো বাংলায়ও কাছাকাছি টপিকের ক্ষেত্রে অভিন্ন কৌশল অনুসরণ করেছি। যেমন—প্রতিদিন দুজন সাহিত্যিকের রচনা ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, পড়ার সময় নোট রাখা, প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ টপিক বাছাই ইত্যাদি।

বাংলা ব্যাকরণের জন্য নবম-দশম শ্রেণির মুনীর চৌধুরীর বোর্ড বইটা প্রায় মুখস্থ ছিল। প্রাচীন ও মধ্য যুগের রচনা বা সাহিত্য সপ্তাহের শেষ দিন পড়তাম ও লিখতাম।

গণিতের ওপর দখলকে কাজে লাগিয়ে প্রিলিতে ১৫ এবং লিখিত পরীক্ষায় ৫০ নম্বর নিশ্চিত করার টার্গেট করি। প্রতিটি টপিকের অঙ্ক আগে গতানুগতিক (বিস্তারিত) করতাম, এরপর সেটা শর্টকাট নিয়মে করার চেষ্টা করতাম। যাতে প্রিলি পরীক্ষায় দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর করা যায়। বই অনুসরণ করেছি সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। উচ্চতর গণিত বই থেকে করেছি বিন্যাস ও সমাবেশ অংশটুকু।

প্রিলিতে সবচেয়ে বেশি নম্বর সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত অংশে অর্থাৎ বাংলাদেশ (২০) ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে (৩০) মোট ৫০ নম্বর। আমি সিলেবাসের টপিক ধরে বিভিন্ন রেফারেন্স বই থেকে পড়তাম। এরপর বাজারের প্রচলিত গাইড বই থেকে বিগত সালে আসা বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নগুলো সমাধান করতাম। রেফারেন্স বই থেকে বিস্তারিত পড়ার সুবিধা হলো—গাইড বই থেকে যে প্রশ্নই দেখতাম, সেগুলোই পরিচিত মনে হতো। বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে বিশদ ধারণা ছিল। প্রিলির প্রস্তুতি নিতে গিয়ে লিখিত পরীক্ষার এ অংশের (৩০০ নম্বরের) পড়ার অনেকটাই হয়ে যায়।

আমার কাছে ভূগোল বিষয়টা জটিল মনে হতো। তাই এই অংশে মাত্র ৫ নম্বর টার্গেট রেখেছিলাম। নবম-দশম শ্রেণির ভূগোল বইয়ের পাশাপাশি ফেসবুকের প্রস্তুতি সংশ্লিষ্ট গ্রুপ-পেজ ও অনলাইনের সহায়তা নিয়েছি।

নৈতিকতা ও সুশাসনের ক্ষেত্রেও অনলাইন থেকে প্রশ্ন ও তথ্য জোগাড় করেছি। মানসিক দক্ষতার জন্য বিগত বিসিএস পরীক্ষার প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো বাসায় বারবার সমাধান করেছি।

বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ায় সাধারণ বিজ্ঞানের ভৌতবিজ্ঞান অংশে সময় কম দিয়েছি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সে কম্পিউটার কোর্স থাকায় প্রযুক্তি বিষয়ের প্রস্তুতিতে বেগ পেতে হয়নি।

৩৮তম বিসিএসই ছিল আমার জীবনের প্রথম বিসিএস। আর এটাতেই সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে এখন শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত আছি।

গ্রন্থনা : এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

Source: Kalerkontho

আগস্ট ০৭, ২০২১

পিয়াসা,মৌ,পরীমনি,হেলেনা জাহাংগির, রাজ,মিশুর বাসায় সি আই ডির অভিযান

 

পিয়াসা-মৌ-পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ
অবৈধ গাড়ি ও অর্থের সন্ধানে সিআইডি
পরীমনি, হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ ছয়জনের বাসায় সিআইডির অভিযান,  সাবেক এমপিপুত্রের বিএমডব্লিউ ও মিশুর ওডি আর- গাড়ি নজরদারিতে,   প্রভাবশালীসহ জড়িত কাউকে ছাড় নয় -সিআইডি

আমদানি নিষিদ্ধ গাড়ির ব্যবসা ছিল আলোচিত মডেল পিয়াসা ও মৌয়ের। কয়েক বছরে চোরাইপথে গাড়ি আমদানি করে প্রায় পাঁচশ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন তারা। বিআরটিএর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে গাড়ির কাগজপত্র করে তা বাজারজাত করেছে চক্রটি।

এ কাজে তাদের মূল সহযোগী ছিলেন শরফুল হাসান মিশু ওরফে মিশু হাসান। এসব গাড়ি অনেক সময় অবৈধভাবে মাদানি রোডের তার মালিকানাধীন ইউরো কার সল্যুশনে রাখা হতো। যা বিক্রি করা হতো ধনীর দুলালদের কাছে। এ চক্রের কাছ থেকে যারা গাড়ি কিনেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খোঁজে নেমেছে।

এর মধ্যে চট্টগ্রামের সাবেক এক এমপিপুত্রও রয়েছেন। অবৈধ উপায়ে তার সংগ্রহে রাখা কোটি টাকা মূল্যের বিএমডব্লিউ গাড়িটি নজরদারিতে রয়েছে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে আনা আরেকটি ওডি আর- ও একটি ল্যাম্বরগিনি গাড়ির সন্ধান করছেন গোয়েন্দারা। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া এ সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য এখন তাদের হাতে।

এদিকে চিত্রনায়িকা পরীমনি, মডেল মৌ ও পিয়াসা এবং হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে সম্প্রতি করা আলোচিত সাতটি মামলা সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্তভাবে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি। সংস্থাটি বলছে, তদন্তে ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের নাম এলেও তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। মামলাসংশ্লিষ্ট ছয়জনের বাসায় শনিবার বিকালে একযোগে অভিযান চালিয়েছে সিআইডি। সেখান থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে অবৈধ গাড়ি ও অর্থ উপার্জনসংক্রান্ত তথ্যও রয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান বাংলাদেশে দামি ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ির ব্যবসা করেন। পিয়াসা-মৌ অবৈধ গাড়ির ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তার হাত ধরেই। তারাও দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি ব্যবহার করতেন। মিশুর ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ২টি রেঞ্জ রোভার, অ্যাকুয়া, ভক্সওয়াগন ও ফেরারিসহ পাঁচটি গাড়ি রয়েছে। তিনি অত্যন্ত সুকৌশলে গাড়ির ট্যাক্স জালিয়াতি করে থাকেন। এছাড়া অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ গাড়ি ব্যবসার মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টাও করেছেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদেও মিশু অবৈধ গাড়ি ব্যবসার কথা স্বীকার করেছেন।

এর আগে রোববার রাতে গ্রেফতার হন মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ। মাদক আইনের মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে তাদের শুক্রবার আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এরপর রাজধানীর তিন থানার পৃথক তিনটি মাদক মামলায় পিয়াসার ৮ দিন ও মৌকে একটি মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। বর্তমানে তারা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হেফাজতে রিমান্ডে আছে। সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এছাড়া বুধবার বিকালে পরীমনিকে গ্রেফতারের পর মাদক মামলায় তাকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, মাঝেমধ্যেই নামি-দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তেন এ চক্রের সদস্যরা। গুলশানের রাস্তায় বিভিন্ন সময়ে তাদের রেস দিতেও দেখা যায়। এমন রেসের সময়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা গেছে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়ার পর ওই সড়কে প্রায়ই বের হতেন তারা। কখনো কখনো শহরের ধনীর দুলাল, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও ব্যবসায়িকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও তাদের সঙ্গে যোগ দিতেন। এতে করে রাস্তায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরাও ভয়ে কথা বলতেন না।

আরেকটি সূত্র জানায়- এ পর্যন্ত গুলশান, বারিধারা, বনানী, বসুন্ধরা আবাসিক ও ধানমন্ডি এলাকার ধনাঢ্য পরিবারের বখে যাওয়া সন্তানের কাছে শতাধিক গাড়ি বিক্রি করে এ চক্রটি। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে- ফেরারি, ওডি, বেন্টলি কন্টিনেন্টাল কার, মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ, রেঞ্জ রোভার মডেল। ছয় হাজার সিসির এসব গাড়ি দুই হাজার সিসি দেখিয়ে বড় অঙ্কের কর ফাঁকি দিয়ে চোরাইপথে আমদানি করা হয়। এরপর বিআরটিএর একটি সিন্ডিকেটের যোগসাজশে অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করে এ গাড়িগুলো বিক্রি করা হয়। চক্রটির গাড়ি ব্যবসার কাগজপত্র যাচাই করলেই এর সত্যতা বেরিয়ে আসবে বলে জানায় সূত্রটি।

আরেকটি সূত্র জানায়, মিশু ও পিয়াসা গ্রেফতার হলেও তাদের গ্রুপের অস্ত্রধারী সদস্য জনৈক সৌরভের নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও ওডি আর-৮ ও একটি বেন্টলি কন্টিনেন্টাল কার রয়েছে। যেগুলো উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মিশু-পিয়াসার চোরাচালান চক্রের সদস্যদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

তিনি বলেন, সম্প্রতি হওয়া আলোচিত সাতটি মামলার ডকেট আমরা শুক্রবার বুঝে পেয়েছি। আসামিদের মধ্যে পরীমনি, মৌ, পিয়াসা ও রাজ বর্তমানে সিআইডির হেফাজতে রয়েছে। তবে হেলেনা জাহাঙ্গীর ও মিশু হাসান আমাদের হেফাজতে নেই। তারা অন্য মামলার তদন্তে ডিএমপির কাছে রয়েছে। তিনি আরও বলেন- আমাদের ফরেনসিক ল্যাব, কেমিক্যাল ল্যাব, ডিএনএ ল্যাব ও আইটি ফরেনসিক ল্যাব রয়েছে। তাই মামলাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তে কোনো সমস্যা হবে না।

৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান এবং তার সহযোগী মো. মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকার গুলশান, বারিধারা ও বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টি আয়োজনের বেশ কয়েকটি স্থানের তথ্য প্রদান করেন। এর ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েদা শাখা ও র‌্যাব-১ এর একটি দল বনানী এলাকায় বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে পরীমনি, নজরুল ইসলাম রাজ, পরীমনির ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম দীপু ও রাজের ম্যানেজার সবুজ আলীকে গ্রেফতার করে।

শুক্রবার রাতে পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জিমিকে গ্রেফতার করে ডিবি। এর আগে পৃথক ঘটনায় হেলেনা জাহাঙ্গীর, পিয়াসা এবং মৌসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

যাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে তারা হলেন- হেলেনা জাহাঙ্গীর, পরীমনি, পিয়াসা, মৌ, নজরুল ইসলাম রাজ, মিশু হাসান।

Source: Jugantar 

আগস্ট ০৫, ২০২১

স্বাস্থ্য সুরক্ষায়-ডাঃ জাহাংগির কবির

আস’সালামু আলাইকুম আমি ডাঃ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর আপনাদের সকলের কাছে দোয়া চাই। আপনারা সকলে জানেন ইবাদাতের জন্য শরীর সুস্হ থাকটা অত্যন্ত জরুরী। সুস্হ শরীর আল্লাহর দেয়া নেয়ামত। এই নেয়ামতের খেয়ানত করা আসলে নিজের নফসের প্রতি জুলুম করা। অথচ আমরা যদি ইসলামের কিছু নিয়ম মেনে চলি তবে কিন্তু সুস্হ থাকতে পারি । আমি চাই আগামী শুক্রবার পবিত্র জুমার দিনে আমাদের সম্মানিত ইমাম সাহেবগন যদি পবিত্র কুর’আন হাদীসের দলিল দিয়ে নীচের কথাগুলো সকল মুসল্লিদের বুঝিয়ে দেন তাহলে এটা আমাদের সকলের জন্য উপকারী হবে ; নিজের শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। এটা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গন্য হবে। আপনারা সকলে এই পোস্ট সরাসরি কপি করে পেস্ট করে পোস্ট দিতে পারেন তাহলে সবাই অনেক বেশী উপকৃত হবে। 1. আমাদের সবার আগে যেটা করতে হবে নিজের জন্য ক্ষতিকর খাবারগুলো বর্জন করতে হবে যেমন সকল প্রকার ভেজিটেবল তেল যেমন সয়াবিন ( মুলত ভেজিটেবল থেকে কোন তেল হয় না এই নাম একটি প্রতারনা), সকল প্রকার প্রসেসড ফুড, সাদা চিনি ইত্যাদি। এখানে আল্লাহ বলেছেন whole food খেতে যেটা আমাদের রোগ মুক্তি করবে এক্ষেত্রে খাবারই হল ঔষুধ এটা রেফারেন্স দিয়ে বললে আরো গ্রহনযোগ্য হবে। 2. আমাদের পরিমিত খাওয়ার সুন্নতের আমল করা হাদীসে যেভাবে খেতে বলা হয়েছে ; এক ভাগ খাবার, এক ভাগ পানি, এক ভাগ খালি এবং স্বল্প আহার অর্থাৎ ক্ষুদা লাগলে খেতে হবে লোভে পড়ে খাওয়া যাবে না । লোভে পাপ পাপে রোগ ব্যাধী। 3. মাগরিবের পর পরই রাতের খাবার শেষ করা; ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন/চার ঘন্টা পূর্বে রাতের খাবার শেষ করা যেন খাবারের হজম প্রক্রিয়া ঘুমাতে যাবার আগেই শেষ হয় ; তাহলেই শরীর ঘুমের ভেতর তার নিজস্ব গঠন, কোষ পরিস্কার এবং আরোগ্যের কাজ করতে পারে । 4. সময় নিয়ে ধীরে সুস্হে চিবিয়ে চিবিয়ে ভালো করে খাওয়া তাড়াহুড়া না করা খাবার খাওয়াকে ইবাদাত মনে করা পূর্ন মনযোগের সাথে খাওয়া। 5. সপ্তাহে দুইটি রোজা মাসের মাঝখানে তিনটি রোজা অন্যান্য নফল রোজা এবং ফরজ রোজা রাখার ব্যাপারে জোর দেয়া।রোজার মাধ্যমে দেহ এবং আত্নার পরিশুদ্ধি ঘটে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে অটোফেজি যার আবিস্কারের মাধ্যমে নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন জাপানী বিজ্ঞানী অসুমী মনে রাখবেন বেশী খেলে আত্না অসুস্হ হয়ে রোজা আত্নাকে শান্ত রাখতে পবিত্র রাখতে সহায়তা করে। 6. বেশী বেশী নফল নামাজ এটা শরীর ভালো রাখতে এবং মনকে শান্ত রাখতে সহায়তা করে মনে প্রশান্তি না থাকলে শরীরে stress হরমন নি:সরন হয় যেটা কিনা শরীরে অনেক ধরনের রোগ তৈরীতে সাহায্য করে যেমন উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস সহ আরো প্রায় একশ রকমের রোগ। 7. সুস্হ থাকতে হলে Early অর্থাৎ এশার নামাজের পর ঘুমাতে যাওয়া এবং ভোরে উঠে তাহাজ্জুত এবং ফজরের নামাজ পড়া জরুরী । আল্লাহ রাতকে দিয়েছেন বিশ্রামের জন্য আর দিনকে কাজের জন্য। রাত ১০টা থেকে দুইটা এই সময়ে শরীরে মেলাটোনিন বেশী থাকে তাই স্বপ্নবিহীন গভীর ঘুমের জন্য রাত ১০টার পূর্বে ঘুমাতে যাওয়া জরুরী। এক দিনের মোট তিন ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ দিন রাত মিলিয়ে আট ঘন্টা ঘুমানো জরুরী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো রাখার জন্য। 8. আল্লাহ শরীরকে তৈরী করেছেন কাজ করার জন্য আমরা যদি কায়িক শ্রম না করি তাহলে শরীর সুস্হ থাকার কোন কারন নেই তাই আমাদের ব্যায়াম করা, হাটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা জীমে যাওয়া যাদের সুযোগ আছে কায়িক শ্রম করা খুবই জরুরী। আমাদের নবী সা: পরিশ্রমী ছিলেন, সমর নায়ক ছিলেন, নিয়মিত ঘোড় দৌড় তীরন্দাজি প্রতিযোগিতা অনুশীলন করাতেন । 9. আমরা জানি সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি তৈরী হয় তাই নিয়মিত রোদে যাওয়া খুবই জরুরী এবং প্রকৃতির কাছে যাওয়া গাছের কাছে সবুজের কাছে যাওয়া pure অক্সিজেন পাওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত জরুরী। 10. মানসিক প্রশান্তি ছাড়া সুস্হতা অসম্ভব তাই আল্লাহর উপর পূর্ন আস্হা রাখা , আখেরাতমুখী চিন্তা করা বিপদ আপদকে গজব না মনে করে আল্লাহর দেয়া পরীক্ষা হিসাবে দেখা এখানে সুরা বাকারার আয়াতগুলো থেকে রেফারেন্স দেয়া যেতে পারে।আর পজেটিভ চিন্তা করা । প্রশান্ত আত্নার জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া। 11. ক্লান্ত শরীর এবং প্রশান্ত মন ভালো ঘুমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং ভালো ঘুম ছাড়া সুস্হ থাকাটা প্রায় অসম্ভব। প্রতিটি ইবাদত আল্লাহর জন্য, নিয়তগুনে বরকত নিয়ত হবে আল্লাহর সন্তুস্টি এবং উনি খুশী হয়ে রোগ থেকে মুক্ত করবেন। লিখেছেন : ডাঃ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর, MBBS, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, লাইফস্টাইল মডিফায়ার।

পরী মনির খবর

 পরী মনি বাংলা সিনেমার নায়িকা হয়ে যে কাজ করেছে তা ভালো চোখে কেউ দেখছে না। অবশ্য শুধু তার দোষ দিয়ে লাভ কি? ভালো ভাবে খোঁজ নিলে এমন অপকর্ম অনেকেই করছে। চিত্র জগৎ, নাচ গানের মঞ্চ অশ্লীলতা দিয়েই শুরু হয়। মেয়েদের এ জাগায় মান সম্মান কিছুই থাকে না।ইজ্জৎ রক্ষা খুবই কঠিন। 

জুলাই ১৯, ২০২১

আমরা কেন সাস্থ্য বিধি মানব?

ঈদুল আজহা সমাগত। অন্যদিকে অতিমারি করোনা এখনো তার ভয়ংকর রূপ নিয়ে তাণ্ডব অব্যাহত রেখেছে। ব্যাপক টিকাকরণের পর যেসব দেশ নিজেদের নিরাপদ ভেবেছিল, সেসব দেশেও করোনার আরেক দফা হানায় নতুন করে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মুসলিমপ্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়ায় কভিড বিপর্যয় চরমে, বাড়িঘরে পড়ে আছে মৃতদেহ। মুসলিমপ্রধান, হিন্দুপ্রধান, খ্রিস্টানপ্রধান, বৌদ্ধপ্রধান—কোনো ‘প্রধান’কেই ছাড় দিচ্ছে না করোনা। বাংলাদেশেও রুদ্ররূপ ধারণ করেছে নৃশংস করোনা। আক্রান্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলার জমিনে মৃত্যুদূতের ব্যস্ততা যেমন বেড়েছে, তেমনি স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রতিযোগিতাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। শহরের সড়কে সেই চিরচেনা যানজট। ফুটপাত, অলিগলি থেকে অভিজাত শপিং মল, হোটেল, রেস্তোরাঁ—সর্বত্রই মানুষের সরব উপস্থিতি। পশুর হাটগুলোতেও উপচে পড়া ভিড়। গ্রামমুখী গাড়ির চাপে মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। কোথাও শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য সুরক্ষার অংশ হিসেবে ন্যূনতম মাস্কও পরছে না বেশির ভাগ মানুষ। ঈদ উৎসবে স্বাস্থ্যবিধি না মানার উৎসবও শুরু হয়েছে, বিশেষ করে গাদাগাদি, ঠাসাঠাসি করে স্বজনের সঙ্গে মিলিত হতে ঈদ যাত্রায় ছুটছে মানুষ। একটি পরিসংখ্যান বলছে, গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে গত ১৫ ও ১৬ জুলাই দুই দিনে ঢাকা ছেড়েছে ১৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬৮৭ সিম ব্যবহারকারী। এর সঙ্গে সিম ব্যবহারকারী নয়, এমন সদস্যদের হিসাব করলে সারা দেশে কয়েক কোটি মানুষ স্বজনের পানে ছুটছে। স্বাস্থ্য বিভাগ, জাতীয় পরামর্শক কমিটি, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ—সবাই বর্তমান পরিস্থিতিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। অনেক জেলা-উপজেলায় শনাক্তের হার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। ঈদের পরপরই সংক্রমণ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। ধর্মীয় উৎসব পালনে এমন ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা কি আবশ্যিক? ইসলাম কি এর অনুমোদন দেয়?

শারীরিক সুস্থতা মহান আল্লাহর এক অপার নিয়ামত। ইসলাম স্বাস্থ্যসচেতনতার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। স্বাস্থ্য রক্ষা করা শরিয়তের তাগিদ। ওয়াহাব ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় তোমার ওপর তোমার শরীরের হক আছে।’ (বুখারি, ৫৭০৩; তিরমিজি, ২৩৫০) কোরআন-সুন্নাহ ও শরিয়ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যেমন গুরুত্ব দিয়েছে, তেমনি তা কার্যকরের ফলপ্রসূ উপায়ও বাতলে দিয়েছে। অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা গ্রহণের চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সুস্থ থাকাকে ইসলাম অধিক উৎসাহিত করেছে। এ জন্য আমরা দেখতে পাই, যে বিষয়গুলোর কারণে মানুষের রোগ হয়, ইসলাম সেগুলোকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে অবহেলা করা বা স্বেচ্ছায় শরীরের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করা ইসলামে নিষিদ্ধ। তাই ইসলামে এ বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন বান্দাকে নিয়ামত সম্পর্কে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি করা হবে তা হলো তার সুস্থতা সম্পর্কে। তাকে বলা হবে, আমি কি তোমাকে শারীরিক সুস্থতা দিইনি?’ (সুনানে তিরমিজি, ৩৩৫৮) সুস্থ শরীর আমাদের হাতে আল্লাহর দেওয়া আমানতও বটে। এই আমানতের যথার্থ রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের কর্তব্য। কাজেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সচেষ্ট হওয়া প্রত্যেক মুসলমানের ঈমান ও বিশ্বাসের দাবি।

ইসলাম মানবতার ধর্ম। মানুষের সহজাত স্বভাবের বিরুদ্ধ কোনো বিষয় ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। তাই মানুষের জান-মাল সংরক্ষণের ওপর ইসলাম বারবার তাগিদ প্রদান করেছে। কাজেই মহামারির উদ্ভব হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। হাদিসে মহামারির ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সংক্রামক রোগ থেকে সাবধানতার বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে, ‘কুষ্ঠ রোগী থেকে এমনভাবে পলায়ন করো, যেমন তুমি বাঘ থেকে পলায়ন করে থাকো।’ (বুখারি, ১৭৬৭) সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্বের সচেতনতা বিষয়ে হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘তোমরা কুষ্ঠ রোগীদের বারবার দেখতে যেয়ো না আর তাদের সঙ্গে যখন কথা বলবে, তখন তাদের এবং তোমাদের মাঝখানে একটি বর্শার পরিমাণ দূরত্ব থাকা উচিত।’ (মুসনাদে আহমাদ, ৫৮১) আবু সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেউ যেন কখনো রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের সঙ্গে না রাখে।’ (বুখারি, ৫৭৭১; মুসলিম, ১৭৪৩) শুধু করোনাভাইরাস থেকে সাবধানে থাকব তা-ই নয়, বরং সব কিছু থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে আমাদের রব আল্লাহ তাআলাই নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা সাবধানতা অবলম্বন করো।’ (সুরা নিসা : ৭১) আল্লাহর হুকুম না হলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়, এ বিশ্বাস একজন মুমিন হিসেবে আমাদের থাকতে হবে। সুতরাং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা মুমিনের কাজ। আর সাবধানতা যেহেতু আল্লাহর নির্দেশ, তাই সাবধানতাও অবলম্বন করতে হবে। সুতরাং দুটির সমন্বয়েই আল্লাহর রহমত আসবে; আল্লাহ রক্ষা করবেন। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করল, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি কিভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা (তাওয়াক্কুল) করব? আমার উষ্ট্রীটি ছেড়ে দিয়ে, না বেঁধে রেখে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘প্রথমে তোমার উষ্ট্রী বাঁধো, এরপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করো।’ (তিরমিজি, ২৫১৭)

ক্ষতি প্রতিহত করা ইসলামের মূলনীতি। শরিয়ত নিজের ও অন্যের ক্ষতি করতে নিষেধ করেছে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা নিজ হাতে নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিয়ো না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৯৫) উবাদা বিন সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ফায়সালা দেন অনুমোদিত নয় নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করা এবং অন্যকেও। (ইবনে মাজাহ, ২৩৪০) নাগরিকের দায়িত্ব হলো, ভালো কাজে রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করা এবং মন্দ কাজে বাধা দেওয়া। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা শুভ কাজ ও খোদাভীরুতার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করো আর পাপ ও খোদাদ্রোহী কাজে সহযোগিতা করবে না।’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ২) অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা নির্দেশ পালন করো আল্লাহ, রাসুল ও তোমাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবানদের।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪৯) হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধানের আনুগত্য ততক্ষণ পর্যন্ত অপরিহার্য, যতক্ষণ সে আল্লাহর অবাধ্যতার আদেশ না করে।’ (বুখারি, ২৯৫৫) অতিমারি করোনা নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের বিধি-নিষেধ আল্লাহর অবাধ্যতার নির্দেশ নয়, বরং ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর। মাস্ক পরার নির্দেশ, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাসহ অন্যান্য বিধি-নিষেধ তাহলে কেন মানব না?

সা’দ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমরা কোনো এলাকায় প্লেগ (মহামারি) রোগের সংবাদ শোনো, তখন সেই এলাকায় প্রবেশ কোরো না। আর তোমরা যেখানে অবস্থান করো, তথায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না।’ (বুখারি, ৫৭২৮; মুসলিম, ২২১৮) ঈদ যাত্রাসহ নানাভাবে আমরা যে অতিমারি করোনার বিস্তারে প্রভাবকের কাজ করছি, তা কি ইসলাম অনুমোদন দেয়? আল্লাহর আদেশ পালন করতে মুসলিম মিল্লাতের পিতা ইবরাহিম (আ.) তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে কোরবানি দেওয়ার জন্য গলদেশে ছুরি চালাতে কুণ্ঠিত হননি। সেই স্মৃতি স্মরণ করে মুসলমানরা ঈদুল আজহার উৎসব পালন করে। আর এই উৎসব পালন করতে ঈদ যাত্রায় কোরআন, হাদিসের বিধান লঙ্ঘন করছি। অতিমারিকালের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাষ্ট্রের আদেশ-নির্দেশ পালনে অবিমৃশ্যকারিতার মাধ্যমে নিজের ও অন্যের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছি। প্রবৃত্তির অনুসরণ করতে গিয়ে ধর্মীয় উৎসব পালনের নামে ধর্মের বিধান লঙ্ঘন করছি।

লেখক : অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]

Source: Kalerkontho

জুলাই ১৮, ২০২১

সাস্থ্য বিধি মেনে হজ্জ

 


করোনাকালে দ্বিতীয়বারের মতো সীমিতসংখ্যক হাজির অংশগ্রহণে হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত শনিবার (১৭ জুলাই) থেকে সৌদির বিভিন্ন স্থান থেকে হাজিরা মক্কার মসজিদুল হারামে এসে তাওয়াফ শুরু করেছেন। শনিবার ভোরবেলা থেকে হাজিদের পদচারণে মুখরিত হয়েছে পবিত্র কাবা চত্বর। গতকাল রবিবার (১৮ জুলাই) থেকে হজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ২২ জুলাসই পাঁচ দিন পর্যন্ত হজের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

হজের প্রাথমিক কার্যক্রম হিসেবে হাজিরা এরই মধ্যে কাবার তাওয়াফ (তাওয়াফ কুদুম) শুরু করেছেন। এরপর তাঁরা সাফা-মারওয়া সায়ি করবেন। গতকাল রবিবার তাঁরা মিনা প্রাঙ্গণে অবস্থান করেছেন। এরপর আজ সোমবার তাঁরা ১০ কিলোমিটার দূরের আরাফা প্রাঙ্গণে যাবেন। এর পরদিন তাঁরা ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন।

আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে কমসংখ্যক হজযাত্রীর অংশগ্রহণে গত বছর হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারও সীমিতসংখ্যক অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ রোধে ২০২০ সালে দীর্ঘ ছয় মাস সর্বসাধারণের ওমরা কার্যক্রম স্থগিত থাকে। এরপর আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সীমিতসংখ্যক অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে হজের কার্যক্রম শুরু হয়।

সুত্রঃ আল আরাবিয়া

Source:Kalerkantho

নভেম্বর ১৫, ২০২০

ক‌রোনা থে‌কে সহ‌জ সুরক্ষা

স্যানিটাইজার,  স্প্রে, জুতোর স্প্রে, পারলে মানুষ এ্যারোসল ছিটিয়ে বাতাস দূষণ থেকে মুক্ত হতে চাইছে।
 স্যানিটাইজার ব্যবহার,  ডিসইনফেক্ট্যান্ট ছিটিয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যাচ্ছে।
তাই সহজ উপায় হল :
* ৩ বেলা খাবারের আগে হাত ধুয়ে ফেলুন সাবান দিয়ে।
* ৫ বেলা ওজুর সময় হাতে সাবান লাগিয়ে নিন।
* বাইরে থেকে এসে হাত ধুয়ে ফেলুন সাবান দিয়ে।
* মনে রাখবেন, শুধু হাত সাবান দিয়ে ধুলে ৭০ শতাংশ ইনফেকশন কমে যায়।
* আর বাইরে গেলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। ৩ পর্দার গেঞ্জি বা সুতি কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলেই হবে।
* মাস্ক ব্যবহার করলে সংক্রমণ কমে যাবে। সংক্রমণ হলেও তা হবে স্বল্প মাত্রায়। ভাইরাসের ইনফেকশন ডোজ কম হবে।
* মানুষকে এত দুশ্চিন্তা আর আতঙ্কে ফেলার কোন দরকার নেই।
* আগের থেকেই বাজারের তরিতরকারি কিনে ভিনেগারে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখার নিয়ম আছে। ইনফেকটিসাইড দূর করার জন্য সিডিসি আগের থেকেই বলে আসছিল এ কথা।


Source: Kalerkantha

নভেম্বর ০৮, ২০২০

দেশের সব মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে মাস্কের ব্যবহার

 করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ মোকাবিলায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে মাস্ক পরার বিষয়টি মসজিদের মাইকে প্রচার করা হবে। এ ছাড়া মসজিদের ফটকে মাস্ক পরার বিষয়টি উল্লেখ করে ব্যানার প্রদর্শন করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে মসজিদ কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কিছুক্ষণ পরপর সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। নো মাস্ক নো সার্ভিসবিষয়ে সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে সচেতন করার জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। স্লোগানটি সব উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শন এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে পোস্টার বা ডিজিটাল প্রদর্শনীর মাধ্যমে তা জানাতে হবে।

দেশের সব মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে মাস্কের ব্যবহার এবং মাইকে এ-সংক্রান্ত ঘোষণা প্রচার করতে স্থানীয় প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বৌদ্ধধর্মীয় ট্রাস্ট ও খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদ ও উপাসনালয়ের পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।


Source : Islamic online Media

নভেম্বর ০৩, ২০২০

দে‌শের সেরা শিক্ষক

দেশের সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম।

‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯’ উপলক্ষে রোববার তাকে দেশের সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।গত সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) শামীম আরা নাজনীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এর আগে একই অনুষ্ঠানে মো. শহিদুল ইসলাম প্রথমে বালিয়াকান্দি উপজেলা পর্যায়ে এবং পরে রাজবাড়ী জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়।এর পর ঢাকা বিভাগের সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি দেশের সেরা প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন।

শহিদুল ইসলাম ১৯৭১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিজ্ঞান বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন এবং ২ ডিসেম্বর ১৯৯৮ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে প্রথম যোগদান করেন।জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৮তে স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জেলার সেরা প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হয়।দেশের মধ্যে তিনি প্রথম তার বিদ্যালয়ে ‘সততা স্টোর’ নামে বিক্রেতাবিহীন দোকান প্রতিষ্ঠা করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে ছয় বছর ধরে মো. শহিদুল ইসলাম কোন নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করেননি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি তিনি নিজে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা বিদ্যালয়টিতে অনুদান হিসেবে দিয়েছেন।

তার বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, গ্রন্থাগার, নামাজ ঘর, শহীদ মিনার, উপকরণ কর্নার, মিনা রাজু পার্ক, পতাকা মঞ্চ, ভূগোলক, রিডিং কর্নার, হাসান আলী স্কয়ার, আমাদের ভুবন, পশুপাখির ম্যুরালসহ নানাবিধ স্থাপনা স্থানীয়ভাবে সম্পন্ন করেন।তিনি যোগদানের পর বিদ্যালয়টিতে  সাফল্য পায় শিক্ষার্থীরা। সমাপনীতে ভালো ফল লাভের জন্য তিনি বিদ্যালয়ের সময়সূচির বাইরে বৈকালিক/নৈশকালীন বিদ্যালয় চালু করেছেন।

Source: The Daily Jugantor